September 25, 2023, 11:29 pm
কয়রা শত কিলোমিটার সড়ক ক্ষতবিক্ষত, কমছে পানি কাটেনি দুর্ভোগ
ওবায়দুল কবির সম্রাট:কয়রা :-সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রা বেঁড়িবাধ ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়। বন্যাকবলিত এলাকায় সড়কের বিভিন্ন অংশ পানির তোড়ে বিলীন হয়ে যায়।কোথাও কোথাও পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে ভাঙাচোরা ক্ষতবিক্ষত সড়ক। অনেক রাস্তা হারিয়েছে চলাচলের উপযোগিতা।পানির তীব্র স্রোতে গ্রামীন কাঁচা -পাকা সড়ক,বসতবাড়ির সড়ক, ব্রীজ, কালভার্ট ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। এ কারণে অনেক এলাকায় খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
এ অবস্থায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা-ঘাট মেরামত ও ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করে দুর্ভোগ কমানোর দাবী বন্যা দুর্গতদের।
২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে পাউবোর বেঁড়িবাধের ২১ টি পয়েন্ট ভেঙ্গে পানিতে ৪টি ইউনিয়ের লক্ষাধিক মানুষ পানিবদ্ধী হয়ে পড়ে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকে গ্রামীণ জনপদের রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট। সরকারি হিসাব মতেই পানি প্রবল স্রোতের তোড়ে উপজেলার ১০৩ কিলোমিটার কাঁচা, পাকা, ছোট বড় সকড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সড়ক। উপজেলার ৩ টি ইউনিয়নে স্বেচ্ছাশ্রমে বিকল্প রিং বাধ দিয়ে পানি মুক্ত করে এলাকাবাসী। বন্যার পানির ধকল অধিকাংশ এলাকা কাটিয়ে উঠছে। পানি কমতে শুরু করায় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় জেগে উঠেছে সড়ক পথ। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলাবাসী। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী পৌছাঁতেও কঠিন হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
যানবাহনে চলাচল করতে না পারলেও পায়ে হেঁটে কোন রকম হাট বাজারসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারছে এলাকাবাসী।
উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের বাসিন্দা কামাল (২৭) জানান, ভাঙ্গা সড়কে কোন রকমে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করলেও যানবাহন নিয়ে চলাফেরা করতে পারছেন না মানুষজন।এসব ভাঙ্গাচুরা রাস্তা কবে নাগাদ মেরামতে করা হবে কবে কাটবে দুর্ভোগ তা নিয়ে প্রশ্ন এখন জনমনে । বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ সড়কে বিপাকে পড়েছেন পথচারীরা।
কয়রা সদর ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন জানান, আমাদের এ এলাকাটি বন্যা প্রবন। অথচ বেঁড়িবাধ ও যাতায়াতের ব্যবস্থা অবহেলিত। বন্যায় বেঁড়িবাধ ও সড়কের রাস্তা ভেঙ্গে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা মেরামত হয়নি । ফলে আমাদের কষ্ট করেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।তিনি দ্রুত ভাঙ্গা সড়ক মেরামত করে দুর্ভোগ কমানোর দাবী জানান ।
এ ব্যাপারে কয়রা সদর, উত্তর বেঁদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, আমার ইউনিয়নে ব্রীজ, কালভার্ট বন্যার পানির স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া অনেক কাঁচা, পাঁকা সড়কের মাটি পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি যাতে করে অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ব্রীজ কালভার্ট মেরামত করে জনগণের যাতায়াতের সমস্যা দুর করা যায়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আজিজুর রহমান জানান, বন্যায় যেসব উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কাঁচা,পাঁকা সড়ক ও ব্রীজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সে সবের তালিকা করে উদ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট দেওয়া হয়েছে । অতিদ্রুত করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রীজ-কালভার্ট ও সড়ক মেরামতের কাজ করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, সুপার সাইক্লোন আম্পান পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা, বেড়ীবাঁধ সংস্কার, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ও করোনায় কর্মহীন মানুষের পাশে থেকে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।তিনি আরও বলেন জনগণের দুঃখ, ভোগান্তি লাঘবের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বন্যা পরবর্তী সময়ে দুর্গত এলাকার মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘব করতে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে দ্রুত ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা-ঘাট মেরামতসহ ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জনদুর্ভোগ কমাবে সরকার এমনটাই আশা এসব এলাকার মানুষের।